শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা ৪২টি ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের নামে আনা এই গাড়িগুলো নিলামের বদলে আমদানিকারকদের মাধ্যমে ছাড় করানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার বাড়তি রাজস্ব আদায়ের আশা করছে এনবিআর।
গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর জাপান থেকে আনা এই গাড়িগুলো চট্টগ্রাম বন্দরের কার শেডে রাখা হয়। আইন অনুযায়ী ৩০ দিনের মধ্যে গাড়ি ছাড় করার কথা থাকলেও, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের কারণে এই প্রক্রিয়া থমকে যায়।
বর্তমানে প্রতিটি গাড়ির আমদানি মূল্য দেড় কোটি টাকা হলেও, ৮৫০% শুল্ক যোগ হওয়ায় বাজারমূল্য দাঁড়িয়েছে ১২ থেকে ১৫ কোটি টাকা। অতিরিক্ত শুল্কায়নের কারণে গাড়িগুলো বিক্রি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
কাস্টম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আমদানিকারকরা সাড়ে আট কোটি টাকা শুল্ক পরিশোধ করলে গাড়ি ছাড় দেওয়া হবে। অন্যথায় নিলামের মাধ্যমে গাড়িগুলো বিক্রি করা হবে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেছেন, "আমদানিকারকদের শুল্ক পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। না করলে গাড়িগুলো নিলামে তোলা হবে।"
এদিকে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, জায়গা খালি করতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, "নিলাম বা ছাড় যেভাবেই হোক, জায়গা খালি হওয়া দরকার।"
গাড়ি ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, এত চড়া দামে এই গাড়ি বাজারে বিক্রি করা কঠিন হবে। বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, "১০ কোটি টাকার গাড়ি ছাড় করা সম্ভব হবে না। দ্রুত নিলামের ব্যবস্থা করা উচিত।"
প্রসঙ্গত, এর আগে সাকিব আল হাসান এবং ব্যারিস্টার সুমনসহ সাতজন সংসদ সদস্য গত বছরের জুলাই মাসেই তাদের গাড়ি ছাড় করিয়ে নিয়েছিলেন।
ফুটবল ভক্তদের মতোই বন্দর কর্তৃপক্ষও অপেক্ষা করছে দ্রুত সমাধানের। এখন দেখার বিষয়, শুল্ক পরিশোধের মাধ্যমে গাড়িগুলো ছাড় হবে, নাকি নিলামের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় হবে।
Mytv Online